পড়াশোনা শিখেছেন কিন্তু কোন লাভ হয়নি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী পাশ করেও চাকরি পাননি এক গৃ’হ’ব’ধূ। সংসারের অভাব অ’ন’ট’নে’র সময় কয়েকটা ফ’র্ম ফিলাপ করে আজ তিনি ফ’র্ম ফিলাপ দিদি নামে পরিচিত। পড়াশোনা শিখে কাজে লাগাতে না পারলেও এখন অশিক্ষিত মানুষদের ফর্ম ফিলাপ করে দিয়ে সংসার চালাচ্ছেন তিনি।
মেদিনীপুরের ওই গৃহবধূর নাম সুদেষ্ণা দাস। সালে মাস্টার ডিগ্রী পাস করেছেন তিনি। ইতিহাস বিষয়ের উপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী করেন। তার বাড়ি জঙ্গলমহলে। বিয়ে হয়েছে ঝারগ্রামে। বিয়ের পর এমএ পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি। তারপর অনেক চেষ্টা করেও চাকরি জোটাতে পারেননি। সরকারি-বেসরকারি নানান পরীক্ষা দিয়েছেন।
কখনো চান্স পেয়েও ইন্টারভিউ দিতে বাতিল হয়ে গেছেন। আবার কখনো টাকা-পয়সার দাবি শুনে পিছিয়ে এসেছেন। তার ফুটফুটে একটি 5 বছরের কন্যা সন্তান রয়েছে। কিন্তু মেয়ের বয়স যখন তিন বছর। ঠিক তখন ঘটে যায় ম’র্মা’ন্তি’ক’ দু’র্ঘ’ট’না’।তার স্বামী অভিজিৎ দাস পেশায় একজন মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ। বাইকে করে বাড়ি আসার সময় পথ দু’র্ঘ’ট’না’য় মৃ’ত্যু হয় তার। এই সময় অ’থৈ জলে পড়েছেন সুদেষ্ণা। ছোট মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে জায়গা হয়নি।
শ্বশুরবাড়ির লোকেরা একপ্রকার তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে তাকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। কোন উপায় দেখতে না পেয়ে অবশেষে বাপের বাড়িতে উপস্থিত হয়েছে সুদেষ্ণা। কিন্তু বাবার অবস্থা ভালো নয়, নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। একদিন মেয়ের আধার কার্ডের ফর্ম ফিলাপ করতে গিয়েছিলেন। সেখানে বেশ কয়েকজন তার কাছে ফর্ম পুরন করতে আসেন।হাসিমুখে তাদের ফর্ম পূরণ করে দিয়েছেন সুদেষ্ণা দেবী।
শুরু হলো তার পথ চলা। অবশেষে, বহু মানুষের চাকরির পরীক্ষার ফর্ম, এছাড়া সরকারি বেসরকারি নানান ফর্ম, ব্যাংকের কাগজপত্র পূরণ করে দেন সুদেষ্ণা। এখন পোস্ট অফিসের সামনে একটা পলিথিন পেতে বসে পড়েন। সেখানে সকলের দরকারে একটাই নাম সুদেষ্ণা। পেন দিয়ে কবিদের ফর্ম পূরণ করে দেন তিনি। কেউ খুশি মনে 5 টাকা আবার কেউ দশ টাকা দেন। টাকা দিয়ে এখন সংসার চালাচ্ছে এবং মেয়ের যাবতীয় খরচ যোগাচ্ছে সুদেষ্ণা।
Leave a Reply